মেডিকেল ডেস্ক, ঢাকা
২০১১ সালের ২১ অক্টোবরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্র এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ছাত্রদল নেতা আবিদুর রহমানকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার হত্যায় তৎকালীন চমেক ছাত্রলীগ সদস্যরা জড়িত থাকলেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মামলা থেকে অব্যাহতি পায়। উক্ত হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১২ জনকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কিন্তু ৫ই আগষ্টের পর থেকে ০৯ মাস অতিবাহিত হলেও আবিদের খুনিদের অনেকেই সগৌরবে বর্তমান বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) এ কর্মরত রয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক বৃন্দ এবং শহীদ আবিদ এর পরিবার বিএমইউতে স্মারক লিপি দিতে যায় গত ৩/০৪/২৫ তারিখে। সেখানে আবিদের খুনীদের অন্যতম সহযোগী এবং নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ডা. ওমর ফারুক যিনি জুলাই অভ্যুত্থানের ৪ আগষ্ট তৎকালীন বিএসএমএমইউ এ গাড়িতে আগুনে পোড়ানোর মামলার অভিযুক্ত আসামীকে সামনে পেয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়।
তখন তাকে পুলিশে সোপর্দ করার কথা বললেও সে পালিয়ে যেতে চায়। সেখানে উপস্থিত সাধারন জনগণের সহায়তায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। চমেক সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী আবিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চায়।
এছাড়াও অভিযুক্ত ১২ জন হলেন ডা. মফিজুর রহমান জুম্মা, ডা. সোহেল পারভেজ সুমন, ডা. বিজয় সরকার, ডা. হিমেল চাকমা, ডা. ফেরদৌস রাসেল, ডা. শান্ত দেবনাথ, ডা. মাহফুজুর রহমান, ডা. নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, ডা. দেবাশীষ চক্রবর্তী, ডা. মোস্তফা কামাল, ডা. রাশেদুর রহমান সানি ও ডা. সালমান মাহমুদ রাফসান।
অভিযুক্ত ডা. মফিজুর রহমান জুম্মা এবং ডা. ফেরদৌস রাসেল আছেন ঢাকার মাতুয়াইলের শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মেডিকেল অফিসার হিসেবে। ডা. সোহেল পারভেজ সুমন আছেন শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে। ডা. হিমেল চাকমা, ডা. নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী শুভ ও ডা. সালমান মাহমুদ রাফসান আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার হিসেবে।
ডা. মাহফুজুর রহমান ধিমান আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমপিএইচ কোর্সে। ডা. শান্ত দেবনাথ আছেন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ডা. দেবাশীষ চক্রবর্তী আছেন অ্যানেসথেসিয়া ডিপার্টমেন্ট, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামে। অন্য তিনজন ডা. বিজয় সরকার, ডা. রাশেদুর রহমান সানি ও ডা. মোস্তফা কামাল মামলা চলাকালেই দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছেন বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, শহীদ আবিদকে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে দুপুর ২টা, সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০টায় তিন দফা নির্যাতন করেছিলেন এই অভিযুক্ত ও ছাত্রলীগ নেতারা। নির্যাতনের পর চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে শহীদ আবিদকে তাঁর বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেন গভীর রাতে। পরদিন তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান আবিদুর রহমান। আবিদ তখন চমেকে ৫১তম ব্যাচে বিডিএস কোর্সে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি চমেক ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। শহীদ আবিদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উত্তর বড়ইতলী গ্রামের মৃত নুরুল কবির চৌধুরীর ছোট ছেলে।
সম্পাদক: আবু সাইদ মোহাম্মদ আখতার হোসেন খান
০১৭২৬-৭৬৩০৩২(সম্পাদক), ০১৭৯২-০৫৯৪৪৬(ব্যবস্থাপনা পরিচালক), ০১৯৩৮-৪৩৬৫২৬(নির্বাহী সম্পাদক)
Copyright © 2025 গাঙচিল নিউজ. All rights reserved.