আশরাফুল আলম
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১৯ সালে একটি অস্থায়ী মন্দির নির্মিত হয়েছিল। তবে ২২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় ঝোড়ো হাওয়ায় ভেঙে পড়ে মন্দিরের ফটক এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো কাঠামো।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মন্দিরটি একটি ঢালু ও উঁচু-নিচু জায়গায় তৈরি হওয়ায় ঝড়-বৃষ্টির সময় সেখানে উপাসনা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অথচ এই মন্দিরটিই ছিল তাদের উপাসনার একমাত্র স্থান, যেটি একটি জীর্ণ-শীর্ণ টিনের ঘরের ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়েছিল। তাই এখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে তাদের উপাসনা।
এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা হতাশা প্রকাশ করে স্থায়ী মন্দির নির্মাণের দাবি জানান প্রশাসনের কাছে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় দ্রুতই একটি অস্থায়ী মন্দির তৈরী করে দেওয়া হবে।
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাহুল রায় বলেন, "অস্থায়ী মন্দিরের চারপাশে আবর্জনা ও মশার উপদ্রব থাকায় উপাসনায় ব্যাঘাত ঘটত। স্থায়ী মন্দির নির্মাণের মাধ্যমে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বিপ্লব দাস বলেন,"আমাদের একটি স্থায়ী মন্দির চাই। বর্তমানে অস্থায়ীভাবে নির্মিত মন্দিরটি সামান্য ঝড়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা শুধু ধর্মীয় কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে না বরং বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মতো ভয়াবহ বিপদের সম্ভাবনাও তৈরি করে। এতে শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে। এছাড়া বৃষ্টির সময় মন্দির প্রাঙ্গণে পানি জমে যায়, যা অত্যন্ত দুর্ভোগজনক। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের উচিত একটি সুরক্ষিত ও স্থায়ী মন্দির গড়ার উদ্যোগ নেওয়া।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন সংঘের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা একটা স্থায়ী উপাসনালয়ের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। ২২ তারিখ মঙ্গলবার অস্হায়ী মন্দিরটি ভেঙে পড়লে সাপ্তাহিক উপাসনা করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার মাধ্যমে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেবঅবগত করান। ভিসি মহোদয় আরেকটি অস্হায়ী মন্দির তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন"
পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, "বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানে ত্রিধর্মীয় (হিন্দু+বৌদ্ধ +খ্রিষ্টান) উপাসনালয়ের একটি প্রকল্প রয়েছে। সেখানে মন্দির অন্তর্ভুক্ত আছে। সেটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলছে। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি অস্থায়ী মন্দির অতি দ্রুত নির্মাণ করে দেয়া হবে।"
সম্পাদক: আবু সাইদ মোহাম্মদ আখতার হোসেন খান
০১৭২৬-৭৬৩০৩২(সম্পাদক), ০১৭৯২-০৫৯৪৪৬(ব্যবস্থাপনা পরিচালক), ০১৯৩৮-৪৩৬৫২৬(নির্বাহী সম্পাদক)
Copyright © 2025 গাঙচিল নিউজ. All rights reserved.