সাহামিনা আক্তার দিতি, জাবি প্রতিনিধি
রোববার (১১ মে) সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা চত্বরে কোরআন বিতরণ করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ঐতিহাসিক কোরআন দিবস উপলক্ষে কোরআন বিতরণ ও প্রথম বর্ষের অসচ্ছল ও মেধাবী ৪০ শিক্ষার্থীর মাঝে দুই লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জাবি শাখা।
এ সময় শাখা শিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান মহিব বলেন, “১৯৮৫ সালের ১০ এপ্রিল ভারতে পবিত্র কোরআন বাজেয়াপ্তের উদ্দেশ্যে দায়ের করা রিট পিটিশনের প্রতিবাদে ১১ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আয়োজিত মিছিলে পুলিশের গুলিতে ৮ জন ভাই শাহাদাতবরণ করেন। সেই দিনটির স্মরণে আমরা প্রতিবছর এই দিনে কোরআন দিবস পালন করি। শিক্ষার্থীদের হাতে কোরআন তুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে আমরা চাই তাদের জীবনে কোরআনের আলো ছড়িয়ে পড়ুক।”
এছাড়া একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলার সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৫৩তম ব্যাচের আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও মেধাবী ৪০ শিক্ষার্থীর মাঝে মোট দু’লাখ টাকার এককালীন শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করা হয়।
শিক্ষাবৃত্তির উদ্বোধনী বক্তব্যে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, “ছাত্রশিবির সবসময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে আসছে। তার ধারাবাহিকতায় ছাত্রশিবির জাহাঙ্গীরনগরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করছে। আমাদের কাছে শিক্ষাবৃত্তির জন্য অনেক আবেদন এসেছিল কিন্তু সীমাবদ্ধতার কারণে সবাইকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা সম্ভব হয়নি। আমরা আশাবাদী, আগামী দিনে সকল শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারব।”
এ সময় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের কল্যাণে জনকল্যাণমূলক কাজ সামনে আরো বেশি করবে বলে আমি মনে করি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা চান্স পায় তারা অনেক বেশি প্রতিযোগিতা করে আসে। কিন্তু বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হন। যদি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো সুযোগ সুবিধা দিতে পারতাম বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, “শিবিরের এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজ প্রশংসার দাবিদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি সৎ, দক্ষ ও নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের প্রয়োজনে সবসময় এগিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস করি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীর সেরা রাজনীতিবিদ ছিলেন হজরত মুহাম্মদ সা:। তিনি ইসলাম প্রচার করেছেন এবং ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে যে ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা সকলের জন্য অনুকরণীয়।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীদের জন্য শিবিরের এ ধরনের প্রোগ্রাম কল্যাণকর বলে আমি মনে করি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যে বাজেট পায় তা দিয়ে আমরা অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের দিকে আলাদাভাবে নজর দিতে পারি না কিন্তু আমার একটি পরিকল্পনা আছে আগামী দিনে আমাদের অ্যালামনাই-এর সাহায্যে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করতে পারব।”