ফিচার ডেস্ক
শিশুদের মানসিক বিকাশ ও সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া মূলত পরিবার, সমাজ ও পরিবেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে গড়ে ওঠে। শিশুর মানসিক বিকাশ বলতে তার অনুভূতি, আবেগ, বুদ্ধি, চিন্তাভাবনা ও আচরণগত পরিবর্তনের ধারাবাহিক উন্নয়নকে বোঝানো হয়। অন্যদিকে সামাজিকীকরণ হলো সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শিশু সমাজের নিয়মনীতি, মূল্যবোধ ও আচরণ রপ্ত করে সমাজের একজন সক্রিয় সদস্যে পরিণত হয়।
শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষালয় হলো পরিবার। পরিবারের স্নেহ, ভালোবাসা ও পরিচর্যা শিশুর মানসিক বিকাশের মজবুত ভিত্তি তৈরি করে। একটি নিরাপদ, ভালোবাসাময় ও উদ্দীপক পরিবেশ শিশুর আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা গড়ে তোলে। শিশুরা পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা, ভাষা দক্ষতা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক আচরণ শিখে থাকে।একই সঙ্গে, সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ শিশুদের মনোযোগী হতে এবং সঠিকভাবে শিখতে সহায়তা করে। পরিবেশের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান যেমন—প্রকৃতি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা ইত্যাদি শিশুর মানসিক প্রসার ও সৃজনশীলতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
অপর দিকে সমাজ শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা শিশুকে পারস্পরিক সম্পর্ক, সহনশীলতা, সহযোগিতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনে সহায়তা করে। স্কুল, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে শিশু সমাজের নিয়মকানুন ও শিষ্টাচার রপ্ত করে। এই সামাজিক সম্পর্কগুলো শিশুর মধ্যে সামাজিক দক্ষতা, আত্মসংযম এবং সহানুভূতি গড়ে তোলে।
শিশুদের মানসিক বিকাশ ও সামাজিকীকরণ একটি ধারাবাহিক ও সমন্বিত প্রক্রিয়া, যেখানে পরিবার, সমাজ এবং পরিবেশের সম্মিলিত ভূমিকা অপরিহার্য। একটি সুস্থ ও উদার সমাজ ও পরিবেশ শিশুর জন্য উপযুক্ত বিকাশের ক্ষেত্র তৈরি করে, যা তাকে আত্মনির্ভরশীল ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
ফিচার রাইটার:
নাইমুল রাজ্জাক
লেখক ও গবেষক