আশরাফুল আলম
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী, আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রথম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান গত রোববার (৪ মে) ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি জানান, প্রায় নয় মাস আগে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকিবুল হাসান রনিকে। উল্লেখযোগ্য অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন- ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আহসান লিমন, সাবেক সভাপতি সাব্বির আহম্মেদ ও নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও আপেল মাহমুদ, বর্তমান সভাপতি আল মাহমুদ কায়েস এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রিয়েল সরকার।
এছাড়া মামলাকৃত নামের তালিকায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ও সাবেক রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর, পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম, সাবেক প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি, সিএসই বিভাগের শিক্ষক ড. সেলিম আল মামুন এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলামের। মামলায় মোট ১৩০ জনের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তারা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ দমনে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে এবং আন্দোলনকারীদের হুমকি দিয়ে সশস্ত্র মহড়া দেয়। পরদিন ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালিয়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষার্থীকে আহত করে। হামলাকারীরা সেই সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করে।
আশিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়েও আমার ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে এবং মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমি এই ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আদালতের কাছে সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান জানাচ্ছি।